অদ্ভুত ভালোবাসা কাহিনী গল্প

অদ্ভুত ভালোবাসা কাহিনী গল্প

অদ্ভুত ভালোবাসা কাহিনী গল্প


অদ্ভুত ভালোবাসা কাহিনী গল্প
অদ্ভুত ভালোবাসা কাহিনী গল্প


অদ্ভুত ভালোবাসা কাহিনী গল্প -  এই ভালোবাসার অদ্ভুত অনেক কষ্ট দেয়। আমি এই মায়ায় জড়াতে চাই না,কিন্তু আমার এই কল্পনার অনুভূতি’কে আস্কারা দিতে চাই না।রোমান্টিক অদ্ভুত ভালোবাসা কাহিনী গল্প’পড়ে দেখে আসুন।হয়তো আপনাদের ভালো লাগবে ভাল লাগলে শেয়ার করবেন।







ডায়রী আর কলম হাতে মাত্রই বসেছি নতুন এক্টা গল্প লিখবো বলে... কিন্তু ঠিক তখনি আম্মুর ডাক আসলো। ডায়রী-কলম রেখে আম্মুর কাছে গেলাম ডাকার কারণ’টা জানতে... আম্মুর কাছে যাওয়া মাত্রই আম্মুর অর্ডার আসলো এক্ষুনি স্টেশন যেতে হবে খালামনি’কে আনতে... 

 কি আর করার... ”মাতৃ আজ্ঞা শিরোধার্য” বলে কথা। তাই চটপট পাঞ্জাবি আর আমার মোটা ফ্রেমের চশমা পড়ে বেরিয়ে পড়লাম, গন্তব্য: রেইল-স্টেশন... 

 ১৫মিনিটে স্টেশনে গিয়ে পৌছালাম। গিয়েই দেখি ট্রেন স্টেশনে ঢুকছে... তাড়াতাড়ি করে প্লাটফর্মে গিয়ে দাঁড়ালাম। তখন মনে পড়লো, খালামনি কোন বগী’তে আছে তা না জেনে ক্যাম্নে খালামনি’কে খুঁজে বের করবো?? 

 এতোগুলা বগী থেকে এক্টা এক্টা করে খুঁজে বের করাও সম্ভব হবে না। নিজেকে গাঁধা, উল্লুক, ঢেঁড়শ বলতে বলতে পকেট থেকে ফোন’টা বের করলাম।

 খালামনি’কে ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম কোন বগী’তে আছে? খালামনি বল্লো, ”খ” বগী কিন্তু নেটওয়ার্কের প্রব্লেম আর লোকজনদের চেঁচামেচিতে আমি শুনলাম ”চ” বগী। ফোন’টা পকেটে রেখেই তাড়াতাড়ি করে ”চ” বগী’র সাম্নে যেতে পা বাড়াতেই কারো সাথে ধাক্কা খেলাম।

 . পিছনে ফিরে তাকাতেই দেখি এক্টা মেয়ে, বুঝলাম এই মেয়েটার সাথেই ধাক্কা’টা খেয়েছি। এক নজরে মেয়ে’টার মাথা থেকে পা অবধি দেখে নিলাম। নীল রং-এর শাড়ি, সাথে নীল রং- এরই মাটি’র কানের দুল, গলা খালি, মুখে মেকি সৌন্দর্যের বালাই নেই... একেবারে সাধারণ সাজ আর খোলা চুল... অপূর্ব লাগছিলো মেয়ে’টাকে। 

 . মেয়েটি আমার দিকে তাকানো মাত্রই আমি অন্যত্র চক্ষুনিবেশ করে তাকে বল্লাম, - দুঃখিত, তাড়াহুড়ো’তে খেয়াল করি নি।

 . মেয়েটি বল্লো, - ঠিক আছে, আসলে আমারই এক্টু সচেতনে হাঁটা উচিত ছিলো।

 . . বলেই মেয়েটি দ্রুত চলে গেলো। আর আমি ঠায় দাঁড়িয়ে তার যাওয়া দেখছি। মনেই ছিলো না যে আমি খালামনি’কে নিতে এসেছি।

 . কিছুক্ষন পর আমার কাঁধে কারো হাত আবিষ্কার করলাম। পিছনে তাকিয়েই দেখি খালামনি। ঘুরতেই খালামনি জিজ্ঞাসা করলো, - এখানে দাঁড়িয়ে কি করছিস?? তারপর ইনিয়ে-বিনিয়ে কিছু এক্টা বলে খালামনি’কে বাসায় নিয়ে আসলাম।

 . রাতে ঘুম আসছিলো না কিছুতেই... সমস্ত চোখ জুড়ে যেন সেই মেয়েটি ভর করে আছে। তাকে ছাড়া যেন কিছুই ভাবতে পারছি না... সে অদ্ভুত এক অনুভূতি, ভাষায় বোঝানো যা অসম্ভব।

 কোন রকমে রাত’টা পার করে সকাল থেকেই আগের মত স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করছিলাম। এক্টা রাতে সেই অজানা মেয়ে’টাকে নিয়ে এতো ভেবেছি, এতোটাই মত্ত থেকেছি তার ভাবনাতে যে এক্টা মুহুর্তের জন্য মনেই হয়েছে যেন আমি তাকে সত্যিই ভালোবেসে ফেলেছি... 

 কিন্তু আমার এই কল্পনার অনুভূতি’কে আস্কারা দিতে চাই না। এই ভালোবাসার অনুভূতিগুলো অনেক কষ্ট দেয়... আমি এই মায়ায় জড়াতে চাই না।


 আর তাছাড়া আদৌ তার সাথে আমার আবার দেখা হবে কি না তারও কোন ঠিক নেই, আদৌ সে আমায় চিনবে কি না তাও জানি না। এ রকম অনিশ্চয়তা নিয়ে থাকা যায় না... 

 কিন্তু কিছুতেই কোন কিছুতে মন লাগাতে পারছি না। সব কিছুতেই যেন তারই ছায়া... মনের সাথে অনেক যুদ্ধ করে অবশেষে মনের কাছে পরাজিত হয়ে মেনে নিতেই হলো যে আমি সেই অজানা মেয়েটাকে ভালোবেসে ফেলেছি... 

 তারপর থেকে শুরু হলো আমার তাকে খোঁজার পালা... বিশ্বাস ছিলো, হয়তো কোনদিন পথের শেষে তার দেখা পেয়েও যেতে পারি... প্রতিদিন স্টেশনে যেতাম, সেই জায়গাটাতেই দাঁড়িয়ে থাকতাম যে জায়গাটাতে তার সাথে আমার প্রথম দেখা হয়েছিলো..... 

 একদিন বিকেলে বাসার সাম্নের রাস্তা’টা দিয়ে কিছুটা অন্য মনস্ক হয়ে হাঁটছিলাম। পরণে নীল আর সাদা চেক পাঞ্জাবি, চুল এলোমেলো আর চোখে সেই মোটা ফ্রেমের চশমা। হঠাৎ হোচট খেয়ে রাস্তার ওপর পড়ে যাই, আমার চোখের চশমা’টাও খুলে কোথায় যেন পড়ে যায়।

 সবকিছু ঝাপসা লাগছিলো, রাস্তায় বসেই চারদিকে হাতিয়ে চশমা’টা খুঁজছিলাম। ঠিক এমন সময় এক্টা মেয়েলি কন্ঠস্বর বল্লো, - এই নিন আপ্নার চশমা’টা.... 

 আমি তার হাত থেকে চশমা’টা নিয়ে চোখে দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে তাকে ধন্যবাদ জানাতে তার দিকে তাকাতেই আমি তো পুরোই অবাক... এ যে সেই মেয়ে যার জন্য আমি সারাটাক্ষণ অস্থিরতায় ভুগি.... 

 আমি তাকে কিছু বলার আগেই সে আমায় বল্লো, - সাবধানে রাস্তায় চলবেন, নয়তো বারবারই এমন হবে... 

 . - জ্বী... . . তারপরই মেয়েটা চলে যেতে লাগছে, তখন মনে হলো... এখন ওকে যেতে দিলে মনের কথাটা আর বলা হবে না। তাই ওর সাম্নে গিয়ে বল্লাম, 

 - আমাকে চিনতে পেরেছেন?? ঐ যে স্টেশন... ধাক্কা.... কিছু মনে পড়ছে??? . অনেকক্ষণ ভেবে মেয়েটা বললো, - ও হ্যাঁ, আপ্নি?? . - জ্বী, আপ্নাকে আমার কিছু বলার আছে... . - হুম বলুন... . - আমি জানি না আপ্নি কে, আপ্নার নাম কি, কোথায় থাকেন কিছুই জানি না। শুধু এতোটুকু জানি, সেদিন আপ্নাকে দেখার পর থেকে আজ অবধি আপ্নি আমার সাথে, আমার পাশে আপ্নাকে অনুভব করি। আপ্নার কল্পনা ছাড়া আমার ভাবনা রাজ্য শুন্য... আপ্নাকে পাগলের মত ছন্নছাড়া হয়ে এখানে ওখানে খুঁজেছি... আমি এটাও জানি না যে ভালোবাসা আসলে কি!! যদি আমার এই অনুভূতির নাম ভালোবাসা হয়... তাহলে আমি আপ্নাকে ভালোবাসি.... 

 . . মেয়েটা চুপ... হয়তো এই কথাগুলো শোনার জন্য প্রস্তুতও সে ছিলো না। তার চুপ থাকা’টা আমার মনকে বারবার খোচাচ্ছিলো... তাই আমি তাকে আবার বল্লাম, - দেখুন আমি বলি নি যে, আপ্নাকেও আমার ভালোবাসতে হবে। আমি শুধু আমার মনের কথাগুলো আপ্নাকে জানিয়েছি... 

 . মেয়েটি তবুও চুপ। আমি আবারো বল্লাম, - হ্যাঁ এটা হতেই পারে আপ্নি অন্য কাউকে ভালোবাসেন। কিন্তু তবুও আপ্নাকে জানালাম, কারণ আমি মনে করি ভালোবাসার মানুষ’টাকে অন্তত একবার হলেও ভালোবাসার কথাটা জানানো উচিত, সে ভালোবাসুক বা না বাসুক.... 

 . - হুম.. . - সব ভালোবাসায় ভালোবাসার মানুষ’টাকে যে পেতেই হবে এমন কোন বাঁধাধরা নিয়ম নেই। কিছু ভালোবাসা হয় প্লেটোনিক, যার ভালোবেসে যাওয়া ছাড়া আর অন্য কোন চাওয়া থাকে না। হয়তো আমার ভালোবাসা ঠিক সে রকম... . . মেয়েটি আবারো চুপ... এবার আমার মনে হচ্ছিলো আমার সবকিছু শেষ হয়ে যাচ্ছে। নিজেকে কিছুটা সাম্লে তাকে বল্লাম, - আপ্নার চুপ করে থাকাও অনেক কথা বলছে... কিন্তু বুঝতে পারছি না আপ্নার এই চুপ করে থাকার অর্থ’টা আসলে কোনটা... হ্যাঁ নাকি না... 

 . . মেয়েটি এবারো চুপ। তখন আমি কিছু না বলে ফিরে আসতে লাগছি... তার কিছুক্ষন পর আমার পাশে হাঁটতে হাঁটতে আমার হাত’টা ধরে সে বল্লো, 

 - এতোদিন এতো সময় নিয়ে আমাকে খুঁজতে পেরেছো আর এই সামান্য কিছুক্ষন সময় অপেক্ষা করতে পারলে না আমার ”হ্যাঁ”-টা শোনার জন্য?? 

 . এবার আমি চুপ... কারণ আমার বলার কিছুই নেই। শুধু ওর হাত’টা আরো এক্টু শক্ত করে ধরে হাঁটতে থাক্লাম.... দু’জনে..... শুরু হলো এক নতুন পথ চলা…

Post a Comment

2 Comments